করোনার দিনে বসে বসে টিভি দেখি, তার চেয়ে বেশী দেখি বিজ্ঞাপন। নিউজের চ্যানেলে এখন অনেক বিজ্ঞাপন। চারটি বিজ্ঞাপন নিয়ে একটু চিন্তাভাবনা শেয়ার করা যাকঃ
১) বিকাশ প্রতারকদের থেকে বাঁচতে যেই বিজ্ঞাপনটি হিউজ এয়ারিং করছে সেখানে একটি কথা আছে ‘মনে রাখবেন বিকাশ কখনো একাউন্টের পিন নাম্বার কিংবা অ্যাপ ভেরিফিকেসান কোড জানতে চায় না’। দারুণ উদ্যোগ, ভূয়া নাহিদদের আমলে এই বিজ্ঞাপন বিকাশের অবস্থানকে শক্ত করেছে, বিকাশকে আরো গ্রহনযোগ্য করে তুলেছে। আমার অবজার্ভেসান হল – যারা পিন বা পাসওয়ার্ড হাতিয়ে নিতে চায় তারা প্রথমেই বলে ‘বিকাশের হেডঅফিস থেকে নাহিদ বলছি’। সেটাকে ডিফেন্ড করা যেত।
এবার আমরা বিকাশ সম্পর্কিত এই জালিয়াত চক্রের টিজিকে খুঁজে বের করি যারা এই কম্যুনিকেসানের মূল টার্গেট। প্রতারক চক্রের হাতে ধরা খায় মূলত গ্রামের সহজ সরল মানুষ, অবস্থাপন্ন কৃষক, ছাত্র, নতুন বিকাশ ব্যবহারকারী, ছোট উদ্যোক্তা, চাকরি প্রত্যাশী, বিদেশে যেতে চায় এমন লোকজন ইত্যাদি- এরা বেশীরভাগই SEC এর C লেভেলের অন্তর্ভূক্ত, অনেকে D-তেও থেকে থাকবে। এরা বিকাশ আর বিকাশের হেড অফিস আলাদা করতে পারবেনা, আমি তা বলছিনা। কিন্তু বিকাশের ‘হেড অফিস’ এবং ‘বিকাশ অফিসের কেউ’ আপনার কাছে বিকাশের পাসওয়ার্ড বা পিন চাইবে বললে বেশী কানেক্টিং হত, বেশী কাজের হত।
২) মিনিস্টার এসির ১২ বছর ওয়ারেন্টি দেওয়া বিজ্ঞাপনে ফেরদৌস যেই রুমে থাকে, সেই রুমের টেক্সার আর মিনিস্টার এসির উপরের টেক্সার সিমিলার। এই সিমিলারিটি থাকাই স্বাভাবিক। মুস্কিল হল রুমের টেক্সার এত ক্লামঝি যে এরমাঝে এসিটা প্রায় হারিয়ে যায়। এসিটা হারিয়ে দেওয়া রুমের টেক্সার কেন এত গুরুত্বপূর্ণ হল বোঝা যাচ্ছেনা। মিনিস্টার ব্র্যান্ড হয়ে উঠছে, কিন্তু তাদের ব্র্যান্ড এম্বাসেডর ফেরদৌসকে ব্যবহার করার প্যাটার্ন দেখে আমি সন্দিহান। উল্লেখ্য কিছুদিন আগে ফেরদৌস আর শখ ওয়াল্টন এসির নানা শহরের ঠান্ডা হাওয়া নিয়ে বিজ্ঞাপন করেছিল।
৩) লাইফবয় অনেক কাজ করে চলছে এই করোনায়। হ্যান্ড স্যানিটাইজারের প্রচুর ফ্রি স্যাম্পলিং করছে। হ্যান্ড স্যানিটাইজারও কাজের। বাসায় আমিই হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করি। শহরের বেশীর মানুষই তাই করে। মুস্কিল হল তারা ১০ সেকেন্ডে ফাস্ট হ্যান্ড ওয়াসের এড দিয়ে লম্বা সময় ধরে হাত ধোঁয়াকে চ্যালেঞ্জ করে ‘তোর সাবান স্লো নাকিরে’ বলেছিল সেটা এখন বিশ্ব স্বাস্থ্যবিধির সাথে কনফ্লিক্টিং। লাইফবয় এখন সাবানের বিজ্ঞাপন দিয়ে হাত ধোঁয়ার পরামর্শ দিচ্ছে, পাশে যথারীতি হ্যান্ডওয়াশও রাখছে কিন্তু ২০ সেকেন্ড হাত ধোয়ার কথা বলছেনা। এই সুযোগটা ডেটল এবং স্যাভলন সাবানে নিচ্ছে। কোভিড ১৯ আঘাত আসার আগে ‘লাইফবয় সুপারফাস্ট পকেট হ্যান্ডওয়াশ’ এর ক্যাম্পেইন করেছিল সেখানে “জীবাণু দূর করে মাত্র ১০ সেকেন্ডে” এই কথা বলেছিল তারা।
৪) ডাচবাংলা ব্যাংক আসলে কিসে ফোকাসড থাকবে বুঝতে পারছেনা- রকেট, নেক্সাস পে নাকি তাদের ব্যাংকিং সেবা? নেক্সাস পে এবং রকেট কি সিমিলার টাইপের সেবা? এদের এড এত পানসে কেন? টিজি কি গরীব মিস্কিন? হিউজ এয়ারিং দিয়ে কি হবে যদি মেসেজ মনেই না থাকে?
চলতি বিজ্ঞাপন নিয়ে আপনাদের অবজার্ভেসান এবং মতামত জানাতে পারেন।
Posted by: Mirza Md. Ileush, Founder & Cheif Everything Officer at Brand Practitioners Bangladesh