Written by 1:52 pm Market Research

কিভাবে একটা TRILLION ডলার কোম্পানি তৈরি করতে হয়?

Think Like
Walton and Herlan Ads
পৃথিবীর হাতে গোনা মাত্র কয়েকজন extraordinary মানুষ এই কঠিন প্রশ্নের উত্তর দেবার উপযুক্ত। যার মধ্যে একজন হচ্ছেন বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ধনী, ইনোভেটর এবং ইনভেস্টর – Jeff Bezos!
বেজোস এর বাসার গ্যারেজে অনলাইনে শুধুমাত্র বই বিক্রি করার মাধ্যমে যে কোম্পানির জন্ম হয়েছিল, আজকে সেই কোম্পানি The Everything Store খ্যাত ট্রিলিয়ন ডলার টেক জায়ান্ট – Amazon!
আজকের এই CASE STUDY তে আমরা মেগা বিলিয়নিয়ার বিজনেস ম্যাগনেট জেফ বেজোসের কাছ থেকে ট্রিলিয়ন ডলার মাল্টি ডাইমেনশনাল বিজনেস তৈরির PRINCIPLE শেখার চেষ্টা করবো।

অ্যামাজন এখন আর শুধু ইকমার্স সম্রাট নয়, অন্যান্য সেক্টরের পাশাপাশি স্ট্রিমিং ইন্ডাস্ট্রিতেও রাজত্ব করতে গত 26 May হলিউডের জায়ান্ট MGM কে কিনে নিল 8.45 billion ডলারের ব্লকবাস্টার ডিলে! 2017 সালে সুপারমার্কেট চেইন Whole Food কে 13.7 billion ডলার দিয়ে কেনার পর এটা অ্যামাজনের second largest acquisition।

যদিও স্ট্রিমিং অ্যামাজনের সাম্রাজ্যের ছোট একটা পার্ট, তবুও রিসেন্টলি অ্যামাজন এনটারটেইনমেন্ট ওয়ার্ল্ডেও একটা প্রমিনেন্ট প্লেয়ার হতে ফোকাস করছে। মার্কেট লিডার Netflix ও Disney+ এর বিরুদ্ধে শো স্পেসের প্রতিযোগিতায় MGM অ্যাকুইজিশন অ্যামাজনের আর্সেনালে অত্যন্ত পাওয়ারফুল একটা আর্টিলারি যোগ করলো।
ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হচ্ছে, গ্লোবাল জায়ান্ট হবার পরও অ্যামাজনের বিজনেস এপ্রোচ স্টার্টআপ হিসেবে যাত্রা শুরুর প্রথম দিন যেমন ছিল, এখনও ঠিক তেমনই আছে। যেটাকে জেফ বেজোস প্রায়ই বলে থাকেন – Day 1!
বেজোস কোনদিন Day 2 তে যেতে যান না। তিনি চান অ্যামাজন যেন Day 1 এর মতো ক্ষুধার্ত থাকে, স্মার্ট, ফাস্ট ডিসিশন নিতে পারে, agile থাকে, ইনোভেট করতে পারে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ – কাস্টোমারকে ডিলাইট করার প্রতি ফোকাসড থাকে!
একটা কথা নিঃসন্দেহে বলতে পারি – অ্যামাজনের থিঙ্কিং প্রসেস, সাকসেস প্রিন্সিপল, মাইন্ডব্লোয়িং স্ট্র্যাটেজি, লিডারশীপ স্টাইল, ইনোভেশন কালচার এগুলোর কিছুটাও যদি আমাদের দেশের বিজনেসগুলো ফলো করতে পারে, তাহলেও আরো বেটার কোম্পানি ও ইকোসিস্টেম তৈরি করা সম্ভব।
তাই অ্যামাজনকে নিয়ে ইন-ডেপথ স্টাডি, এনালাইসিস এবং ডিসকাসন আমাদেরকে ট্রিলিয়ন ডলার কোম্পানি না হোক, মিলিয়ন কিংবা বিলিয়ন ডলার কোম্পানি তৈরির পথ দেখাতে পারে বলে আমি বিশ্বাস করি।
আর সেজন্যই আমাদের আজকের এই কেইস স্টাডি…let’s dive in!
Amazon Leadership Principles
অ্যামাজনের বিজনেসের একদম কোর (core) এ রয়েছে 14 টি বিখ্যাত লিডারশীপ প্রিন্সিপল।
স্টার্টআপ থেকে গ্লোবাল বেহেমথ হবার জার্নির পুরো সময়টাতে এই মহা গুরুত্বপূর্ন প্রিন্সিপলগুলোই গাইড করেছে অ্যামাজনের ভিশন, স্ট্র্যাটেজি, কালচার, প্ল্যাকটিস, এক্টিভিটি।
আজকে তাই আমরা আলোচনা করবো অ্যামাজনকে ইন্টারনেট জায়ান্টে রুপান্তরিত করার জন্য লিজেন্ডারি লিডার জেফ বেজোসের প্রয়োগ করা সেই 14 LEADERSHIP PRINCIPLES
আপনি যদি একজন বিজনেস লিডার হয়ে থাকেন, এই আর্টিকেল এবং নিচের প্রিন্সিপল গুলো আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা রিসোর্স হিসেবে কাজ করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
1. Customer Obsession
1994 সালে যখন অ্যামাজনের যাত্রা শুরু হয়েছিল, তখন তার মিশন ছিল – ‘To be Earth’s most customer-centric company’.
অ্যামাজনের প্রথম লিডারশিপ প্রিন্সিপলটা তাই অবভিয়াস: ‘Customer Obsession’.
অর্থাৎ অ্যামাজন এমন একটা কোম্পানি যা কিনা তার কাস্টোমারদেরকে নিয়ে ভীষন ভীষন ভাবে অবসেসড। অ্যামাজনের প্রতিটা এক্টিভিটি, প্রজেক্ট, গোল, ইনভেনশনের শুরু এবং শেষ হয় কাস্টোমারকে top of mind এ রেখে।
AMAZON ALWAYS STARTS WITH THE CUSTOMER AND WORKS BACKWARDS.
উদাহরণস্বরুপ, অ্যামাজন যখন প্রচলিত ধারণার বাইরে গিয়ে Customer Review, Free Everyday Shipping, 1 Click Ordering, Amazon Prime ইত্যাদি ইনোভেশন নিয়ে এসেছিল, তখন অনেক ইন্ডাস্ট্রি এক্সপার্ট এবং মিডিয়াই সেগুলোকে ক্রিটিসাইজ করেছিল। কিন্তু তারা অ্যামাজনের লং টার্ম স্ট্র্যাটেজি (Obsessive over a better customer experience) প্রথমে বুঝে উঠতে পারেনি।
আল্টিমেটলি কাস্টমার সেন্ট্রিক এই ইনোভেশন এখন industry standard.
অ্যামাজনের যে state of the art লজিস্টিক সিস্টেম রয়েছে সেটা কিন্তু আদতে একটা সাপ্লাই চেইন কোম্পানি হবার ইচ্ছে থেকে আসেনি। বরং অ্যামাজন বুঝতে পেরেছিল স্পিড, ডেলিভারি কোয়ালিটি এসব কাস্টোমারকে একটা বেটার এক্সপেরিয়েন্স দেবে।
তাই তারা ইনভেস্ট করেছে warehouse automation, machine learning, artificial intelligence, robotics fulfillment center এসবের পিছনে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আমাদের কোম্পানিগুলো কত দিনে অ্যামাজনের মতো customer obsession কে বিজনেসের মূলমন্ত্র বানাতে শিখবে?
2.Ownership
জেফ বেজোস প্রায়ই একটা কথা বলেন – “mission driven teams make better products”.
মনে রাখতে হবে যে একজন এমপ্লয়ী জয়েন করার পর দিন থেকেই আপনার কোম্পানির মিশন এর সাথে ফুললি এলাইন হয়ে যায় না। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে সঠিক ভাবে ইন্সপায়ার করতে পারলে সে একদিন আপনার কোম্পানির শ্রেষ্ঠ asset এ পরিণত হবে।
অ্যামাজন তাই প্রতিটা লিডারকে extreme ownership নিতে ইন্সপায়ার করে, এবং একটা সাসটেইনএবল ভেঞ্চার তৈরি করতে গেলে এর কোন বিকল্প নেই।
3.Invent and Simplify
Amazon is a king of innovation.
অ্যামাজনে গড়ে উঠেছে এমন এক culture of innovation, যেখানে প্রতিটা টিমকে কন্টিনিউয়াসলি ইন্সপায়ার করা হয় innovant এবং invent করতে। কারণ তারা বিশ্বাস করে Innovation is everyone’s responsibility.
Amazon Web Service, Amazon Echo, Alexa ইত্যাদি এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
তবে বেশিরভাগ মানুষ যখন innovation বলতে টেকনোলজি ইনোভেশন বোঝে। যদিও অ্যামাজনের সবচেয়ে ইম্প্যাক্টফুল ইনোভেশনগুলো টেকনোলজিকে কাজে লাগিয়েই এসেছে, অ্যামাজনের আসল ইনোভেশন – কাস্টোমারের friction কমানো!
ইনোভেশন এর পাশাপাশি আরেকটি গুরুত্বপূর্ন জিনিস simplification.

শেয়ারহোল্ডারদের কাছে 2017 তে লেখা চিঠিতে বেজোস বলেছিলেন যে তারা powerpoint একদমই ব্যবহার করেন না। বরং প্রতিটা প্লান, প্রপোজাল, সার্ভিস, ইনভেস্টমেন্ট ইত্যাদির জন্য 6 পাতার একটা structured memo লিখতে হয়। এই ডকুমেন্টেশনের অন্যতম সুবিধা হচ্ছে এটা প্রসেসকে simplify করে এবং clarity নিয়ে আসে।

আমি বিভিন্ন কোম্পানির সাথে কনসাল্টিং করার এক্সপেরিয়েন্স থেকে দেখেছি বাংলাদেশের বেশিরভাগ লোকাল কোম্পানি প্রোপারলি documentation মেইনটেইন করতে পারে না।
কোম্পানির লং টার্ম স্ট্র্যাটেজি, Standard Operating Procedures (SOP), প্ল্যান, মিটিং এজেন্ডা, আলোচনার সামারি, জব ডেসক্রিপশন ইত্যাদি সবকিছু যত বেশি down to the letter ডকুমেন্ট করা যাবে তত বেশি বিজনেস সহজ হবে – it’s as simple as that!
4.Are Right, A Lot
অ্যামাজন এর মতে লিডারকে স্ট্রং জাজমেন্ট এবং instinct কাজে লাগিয়ে সঠিক কাজ করতে হবে।
একটা জায়ান্ট কোম্পানি হবার পরেও সারপ্রাইজিংলি তাদের বুর্যোক্রেসি নেই বললেই চলে। কিন্তু একটা জিনিস আছে সেটা হচ্ছে – লিডারকে ফুল accountability নিতে হবে তার প্রতিটি ডিসিশন এবং কাজের জন্য।
এই প্র্যাকটিসটি আমাদের বিজনেসগুলোতেও খুবই জরুরি। অযথা এক্সকিউজ, ব্লেইম গেইম, একে অপরকে দায় চাপানোর বাজে কর্পোরেট কালচারকে কবর দিয়ে Ownership নেবার এবং আরো বেশি সঠিক ডিসিশন নেবার কালচার গড়ে তুলতে হবে।
Remember –
‘CULTURE EATS STRATEGY FOR BREAKFAST’!
5.Learn and Be Curious
লেখার শুরুতে বলেছিলাম, অ্যামাজন একটা ট্রিলিয়ন ডলার কোম্পানি এবং বেজোস নিজে ultra-rich হলেও বিজনেস রান করেন একটা স্টার্টআপের প্রথম দিন (Day 1) হিসেবে।

2017 সালে শেয়ারহোল্ডারকে লেখা চিঠিতে জেফ বেজোস লিখেছিলেন – “I work in an Amazon building named Day 1….Day 2 is stasis. Followed by irrelevance. Followed by excruciating, painful decline. Followed by death. And that is why it is always Day 1.”

পারসোনালি এই Day 1 কনসেপ্ট আমার কাছে লাইফ চেইঞ্জিং মনে হয়। শুধুমাত্র কোম্পানিই না, ব্যক্তিগত জীবনেও আমরা অনেক সময় কিছুটা সফল হলেই complacent হয়ে যাই, stagnant হয়ে যাই, arrogant হয়ে যাই। আর ঠিক তখনই অন্য কেউ এগিয়ে যাবার সুযোগ পায়।
আরেক লিজেন্ড Apple প্রতিষ্ঠাতা Steve Jobs ঠিক একারণেই 2005 সালে স্ট্যান্ডফোর্ডের সমাবর্তনে বলেছিলেনঃ
“STAY HUNGRY, STAY FOOLISH!”
6. Hire and Develop the Best
অ্যামাজনে 1 মিলিয়ন এর উপর ফুলটাইম এবং পার্ট টাইম এমপ্লয়ী কাজ করছে।
সুতরাং প্রশ্ন হচ্ছে – কিভাবে অ্যামাজন এমন টিম তৈরি করে যেগুলো ব্যুরোক্রেসি এভয়েড করে ইনোভেটিভলি চিন্তা এবং কাজ করতে পারে?
এখানে অ্যামাজনের দুইটা rule of thumb রয়েছেঃ
  • প্রথমটা হলো প্রতিটা টিমে diverse ব্যাকগ্রাউন্ডের মেম্বার থাকবে যেন ইউনিক আইডিয়া তৈরি হয়।
  • দ্বিতীয়টা হচ্ছে ছোট ছোট টীম তৈরি করা, যাদেরকে বলা হয় ‘Two Pizza Team’ (অর্থাৎ টিম সাইজ এরকম যে দুইটা পিজ্জা দিয়ে সবাইকে খাওয়ানো যায়)!
সেই সাথে অ্যামাজনের আরেকটা বহুল আলোচিত প্র্যাকটিস হচ্ছে – প্রতিটা হায়ারের সাথে সাথে পারফরমেন্স এর ওভারঅল bar আরো উপরে ওঠানোর চেষ্টা করা।
এজন্য তারা exceptional ট্যালেন্ট খুজে বের করে, লিডাররা অন্য লিডারদেরকে তৈরি করার জন্য সিরিয়াসলি টাইম দেয়, কোচিং করায়, ইফোর্ট দেয়।
7.Insist on the Highest Standards
অ্যামাজন হাইয়েস্ট স্ট্যান্ডার্ডে বিশ্বাসী, আর এজন্য অ্যামাজনের প্রতিটা লিডারের একটা গুণ থাকতে হবেই হবে, সেটা হচ্ছে – attention to details.
আমি দেখেছি আমাদের দেশে গ্রোথ স্টেজে গিয়ে অনেক লিডাররা একটা মারাত্মক ভুল করে বসে…
নিজেরা ডিটেইল্ড ওয়েতে ম্যানেজ করতে পারবে না ভেবে বা ডেভেলপ করার অনিচ্ছা থেকে অনেক সময় নিজেদের কোর কম্পিটেন্সি আউটসোর্স করে ফেলে!
This is a DEADLY Mistake.
ডিয়ার বিজনেস লিডার, একটা কথা সবসময় মনে রাখতে হবেঃ
স্ট্র্যাটেজিক ডিসিশন মেকিং এবং CORE COMPETENCY কখনোই আউটিসোর্স করা যাবে না…NEVER, EVER.
এগুলো অবশ্যই অবশ্যই inhouse করতে হবে। বিশেষ প্রয়োজনে প্রসেস, পলিসি ডকুমেন্টেশন করে থার্ড পার্টিকে দিয়ে আংশিক এক্সিকিউশন করানো যেতে পারে, কিন্তু সেক্ষেত্রেও হাই স্ট্যান্ডার্ড মেইনটেইন হচ্ছে কিনা সেদিকে সর্বদা সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
Thinking Time!
স্ট্র্যাটেজি গুরু Michael Porter বলেছিলেনঃ
“STRATEGY IS ABOUT MAKING CHOICES, TRADE-OFFS; IT’S ABOUT DELIBERATELY CHOOSING TO BE DIFFERENT.”
অ্যামাজন চুজ টু বি ডিফরেন্ট। অ্যামাজন সবাই হতে চায় ঠিকই, কিন্তু সেজন্য আগে অ্যামাজনের মতো করে চিন্তা করা শিখতে হবে, স্ট্র্যাটেজি ডেভেলপ করতে হবে, প্রিন্সিপল ফলো করতে হবে।

আশা করি এই ‘Think Like Amazon’ নামের এই কেইস স্টাডিটি আপনার জন্য একটা সুপার-হেল্পফুল গাইডলাইন হিসেবে কাজ করবে।

Writer – Mark Anupom Mollick

Share this on
Close