Written by 7:20 pm News, PR

ফ্রিজের বাজারে এখন দেশীয় ব্র্যান্ডের দাপট

Capture 1
Herlan and Banglalink Ads Banner_May_2025_Updated

Captureমাত্র এক দশকেই রেফ্রিজারেটর বা ফ্রিজের বাজার পুরো বদল গেছে। বিদেশি ব্র্যান্ডগুলোকে পেছনে ফেলে এই বাজারে এখন দেশীয় ব্র্যান্ডের দাপট। বর্তমানে ফ্রিজের বাজার হিস্যার ৭৭ শতাংশই নিয়ন্ত্রণ করছে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান।

দেশীয় ব্র্যান্ডের মধ্যে অন্য যেকোনো ব্র্যান্ডের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে ওয়ালটন। দেশীয় এ ব্র্যান্ড ফ্রিজের বাজারের ৬৬ শতাংশ দখলে নিয়ে নিয়েছে। তাদের সহযোগী ব্র্যান্ড মার্সেলের হিস্যাও কম নয়, ৫ দশমিক ৭ শতাংশ। আরেক দেশীয় ব্র্যান্ড যমুনার বাজার হিস্যা ২ দশমিক ৯৯ শতাংশ। বিদেশি ব্র্যান্ডের মধ্যে সিঙ্গারের হিস্যা ৬ দশমিক ২৮ শতাংশ, আর বাটারফ্লাইয়ের হিস্যা ৩ দশমিক ১৪ শতাংশ।

মার্কেটিং ওয়াচ বাংলাদেশের (এমডব্লিউবি) এক গবেষণায় বাংলাদেশের ফ্রিজের বাজারের এই চিত্র উঠে এসেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মার্কেটিং বিভাগে গতকাল সোমবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে গবেষণা প্রতিবেদনটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়। গবেষণা প্রতিবেদনটির বিস্তারিত তুলে ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও এমডব্লিউবির সহপ্রতিষ্ঠাতা মো. নাজমুল হোসাইন।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১০ সাল পর্যন্ত দেশের ফ্রিজের বাজার বিদেশি ব্র্যান্ডগুলো নিয়ন্ত্রণ করত। তারপর থেকেই দেশীয় ব্র্যান্ডের কাছে পিছিয়ে পড়তে থাকে বিদেশি কোম্পানির ফ্রিজ। বর্তমানে ফ্রিজের বাজারের আকার প্রায় ৬৮ কোটি ডলারের বা ৫ হাজার ৭৮০ কোটি টাকার। আগামী বছরই নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যের বাজার ৮৮ কোটি ডলারে গিয়ে পৌঁছাবে, সেই পূর্বাভাস রয়েছে।

মাঠপর্যায়ে সরাসরি ১ হাজার ৭৭৮ ও অনলাইনে ৬৬২ জন ফ্রিজ ব্যবহারকারীর ওপর জরিপ, ১০টি দলবদ্ধ আলোচনা, ১০টি খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান নিরীক্ষা, ১০ জন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে আলোচনা, অনলাইনে ৩ হাজার ৮৬০ ক্রেতার প্রতিক্রিয়াসহ আরও কয়েকটি পদ্ধতি ব্যবহার করে গবেষণাটি করা হয়েছে। গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান ও এমডব্লিউবির সহপ্রতিষ্ঠাতা মিজানুর রহমান, নাজমুল হোসাইন এবং একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রাফিউদ্দীন আহমদ ও গবেষক সাখাওয়াত হোসেন।

অনুষ্ঠানে বলা হয়, বাংলাদেশে প্রায় দুই দশক ধরে ফ্রিজের বাজার দ্রুত বাড়ছে। বর্তমানে শহরের চেয়ে গ্রাম ও উপশহর এলাকায় পণ্যটির চাহিদা বেশি বাড়ছে। ফ্রিজের বাজার বৃদ্ধির পেছনে মধ্য ও উচ্চ মধ্যবিত্তের দ্রুত বিকাশ, ছোট পরিবার ও মহিলা কর্মজীবীর সংখ্যা বৃদ্ধি, নতুন নতুন গ্রামে বিদ্যুতায়ন, কম খরচে দেশীয় ফ্রিজ কেনার সক্ষমতা এবং দীর্ঘমেয়াদি কিস্তিতে পণ্যটি কেনার সুবিধা থাকার বিষয়টি উল্লেখযোগ্য।

বছরে ৩২ লাখ ফ্রিজ বিক্রি

গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯ সালে সারা দেশে প্রায় ৩২ লাখ ফ্রিজ বিক্রি হয়েছে। এগুলোর মধ্যে ২১ লাখ ৪৫ হাজার ফ্রিজই ওয়ালটনের। দেশীয় এই প্রতিষ্ঠানের আরেক ব্র্যান্ড মার্সেল বিক্রি করেছে ১ লাখ ৮৫ হাজার।

ওয়ালটনের পর সবচেয়ে বেশি, ২ লাখ ৪ হাজার ফ্রিজ বিক্রি করেছে বিদেশি ব্র্যান্ড সিঙ্গার। বাটারফ্লাইয়ের ইকো প্লাস ব্র্যান্ডের ফ্রিজ বিক্রি হয়েছে ১ লাখ ২ হাজার। দেশীয় ব্র্যান্ড যমুনা বিক্রি করেছে ৯৭ হাজার। এ ছাড়া স্যামসাং ৩৭ হাজার ৩০০, এলজি ৪৪ হাজার ৫০০, হিটাচি ২২ হাজার, শার্প ৩৯ হাজার ও তোশিবা ৬ হাজার ফ্রিজ বিক্রি করেছে। অন্যান্য ব্র্যান্ড বিক্রি করেছে ৩ লাখ ২৪ হাজার ফ্রিজ।

দেশীয় ব্র্যান্ডে সন্তুষ্টি

ফ্রিজের দেশীয় ব্র্যান্ডের ওপর ক্রেতাদের একটা বড় অংশ সন্তুষ্ট বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। আবার কিছু বিষয়ে অভিযোগও রয়েছে ক্রেতাদের। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অধিকাংশ ক্রেতা মনে করেন, অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে তুলনামূলকভাবে ভালো মানের ফ্রিজ আনতে সক্ষম হয়েছে দেশীয় প্রতিষ্ঠান।

Share this on
Close