Written by 4:30 pm News

ভাইরাল বিজ্ঞাপনে বিক্রি বেড়েছে কাকলী ফার্নিচারের

Image Of What Is Kakoli Furniture Meme
Walton and Herlan Ads_2025

এস এম সোহেল রানা গাজীপুরের শ্রীপুরের মাওনা চৌরাস্তার কাকলী ফার্নিচার নামে একটি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান। মুঠোফোনে নিজের তৈরি বিজ্ঞাপনেই তাঁর ফার্নিচারের বিক্রি বেড়ে গেছে।

সোহেল রানার তৈরি বিজ্ঞাপনটি এখন ভারত, বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বাংলা ভাষাভাষী মানুষের ইউটিউব, ফেসবুক, টুইটারসহ বিভিন্ন যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরছে। বিশেষ করে প্রতিষ্ঠানটির বিজ্ঞাপনী স্লোগান ‘দামে কম মানে ভালো, কাকলী ফার্নিচার’ ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

বিজ্ঞাপন তৈরির আগে দৈনিক প্রায় তিন লাখ টাকার ফার্নিচার বিক্রি হতো। গত ১০-১২ দিনে দৈনিক চার থেকে সাড়ে চার লাখ টাকার ফার্নিচার বিক্রি হচ্ছে।

বিজ্ঞাপনটি গত ১৫ দিনে ভারতীয় জনপ্রিয় কিছু ইউটিউব চ্যানেলে আলাদাভাবে সর্বোচ্চ ৬ মিলিয়ন ভিউ পেয়েছে। তুমুল আলোচনায় থাকা বিজ্ঞাপনটি খবরের শিরোনাম হয়েছে ভারত, বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে। এসব গণমাধ্যমের মধ্যে আছে আনন্দবাজার পত্রিকা, বিবিসি বাংলা, হিন্দুস্তান টাইমস, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, এই সময়, জি নিউজ, জি ২৪ ঘণ্টা, নিউজ ১৮, সংবাদ প্রতিদিনসহ বাংলাদেশের কিছু গণমাধ্যম।

এই ভিডিও নিয়ে নিজেদের ইউটিউব ও ফেসবুকে মজাদার কনটেন্ট তৈরি করছেন ভারতের জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পীরা। এ ছাড়া দেশটির কয়েকটি রাজনৈতিক দলের কয়েকজন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি বিজ্ঞাপনটির কনটেন্ট তৈরি করে নিজেদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়েছেন। সেগুলো পেয়েছে ব্যাপক সাড়া। কাকলী ফার্নিচার ও এর বিজ্ঞাপনের স্লোগান নিয়ে কলকাতা থেকে কয়েকটি গান তৈরি করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপনটি নিয়ে শুধু যে আলোচনা হচ্ছে, তা নয়। এটি নিয়ে হচ্ছে সমালোচনা ও ট্রল। বিশ্বব্যাপী তুমুল আলোচনায় আসায় প্রতিষ্ঠানটির পণ্যের চাহিদা বেড়েছে বেশ। ভারতের কলকাতায় ও দেশের কয়েকটি জেলায় প্রতিষ্ঠানটির শাখা খুলবেন বলেও জানিয়েছেন সোহেল রানা।

নিজের তৈরি বিজ্ঞাপন সম্পর্কে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান সোহেল রানা। তিনি বলেন, ‘অল্প কিছু পুঁজি নিয়ে ২০ বছর আগে যাত্রা করেছিল প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে গাজীপুর ও ময়মনসিংহে আমাদের তিনটি শাখা আছে। আমার কাছে যথেষ্ট টাকা ছিল না। তাই ভালো বিজ্ঞাপন তৈরি করতে পারিনি। তাই অভিভাবকের অনুমতি নিয়ে নিজের মুঠোফোনে ক্রেতার দুই শিশুর ছবি ও কণ্ঠ ধারণ করেছিলাম। সেটি নিজের মুঠোফোনেই সম্পাদনা করি। এরপর তা নিজের ইউটিউব ও ফেসবুকে প্রকাশ করি। কিন্তু এটি যে এত সাড়া ফেলবে, তা কল্পনাও করিনি। নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়েছে এই বিজ্ঞাপন। গত ১৫ দিনে এই প্রসঙ্গে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক অনেকগুলো গণমাধ্যমে আমার সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। আমার পণ্যের এখন চাহিদা বেড়েছে। তাই কলকাতা ও বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় আমরা প্রতিষ্ঠানটির শাখা খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ ছাড়া অনলাইনে পণ্য বিক্রির জন্যও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বিজ্ঞাপনটি ভাইরাল হওয়ার পেছনে ইউটিউবারদের বড় ভূমিকা আছে। আমি তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞ।’

এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমান উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, একটি বিজ্ঞাপন যে এতটা আলোচনার জন্ম দিতে পারে, তা কখনোই জানা ছিল না। ভাইরাল বিজ্ঞাপনটির কারণে প্রতিদিন প্রচুর ক্রেতা প্রতিষ্ঠানে আসছেন। বিক্রি বেড়েছে অনেক। প্রতিটি শাখায় ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। এ ছাড়া দেশের কয়েকটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান কাকলী ফার্নিচারের সঙ্গে পণ্য বিক্রির চুক্তি করার প্রস্তাব পাঠাচ্ছে। বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

আমান উল্লাহ আরও বলেন, ‘আমাদের বিজ্ঞাপন ভাইরাল হওয়ার পর বর্তমানে তিনটি শাখা মিলিয়ে প্রায় ৩০ শতাংশ বিক্রি বেড়েছে। আগে দৈনিক প্রায় তিন লাখ টাকার বিক্রি হতো। গত ১০-১২ দিনে চার থেকে সাড়ে চার লাখ টাকার বিক্রি হচ্ছে। মাসের শুরুতে বিক্রি বেড়ে যায়। সে হিসাবে জুন মাসের ১০-১৫ তারিখ পর্যন্ত আরও ভালো বিক্রি হওয়ার আশা করছি।’

Share this on
Close