অনলাইনে রয়টার্স ইভেন্টের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো ‘রেসপনসিবল বিজনেস ২০২১।’ ব্যবসার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য পদক্ষেপ সংক্রান্ত আলোচনার একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করেছে অনুষ্ঠানটি। এ অনুষ্ঠানে সরকার, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং ব্যবসা সংশ্লিষ্ট বক্তাগণ বৈশ্বিক টেকসই রূপান্তরের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক চুক্তি, প্রতিশ্রুতি এবং পদক্ষেপ সম্পর্কে তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।
এখানে আরও আলোচনা করা হয়, নতুন সুযোগগুলো কাজে লাগানোর জন্য নতুন কাঠামো ও নতুন মডেল তৈরির মাধ্যমে কীভাবে একটি সুস্পষ্ট লক্ষ্য এবং কৌশল অর্জন করা যায়। আর সেই স্পষ্ট উদ্দেশ্য ও কৌশলকে ঘিরে কীভাবে একসাথে নতুন কাঠামো ও মডেল তৈরি করা যায়; এমন অনেক বিষয়।
হুয়াওয়ে কর্পোরেট সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং বোর্ডের পরিচালক ক্যাথেরিন চেন বলেন, “টেকসই উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন কার্বন নিরপেক্ষতা, সার্কুলার ইকোনোমি, শক্তির কার্যদক্ষতা এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা”। তিনি তার মূলপ্রবন্ধে কার্বন নিঃসরণ হ্রাস এবং নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন এবং হুয়াওয়ে স্মার্ট পিভি সমাধানের কথা তুলে ধরেন, যা কিনা ৬০টিরও বেশি দেশে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “মোট কথা, বৃহৎ স্থলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে স্থাপন করা হলে, হুয়াওয়ের স্মার্ট পিভি সমাধান বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় সাত শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস করতে সহায়তা করতে পারে। এন্টারপ্রাইজ ক্যাম্পাস এবং বাড়িতে ব্যবহার করা হলে, এটি বিদ্যুৎ উৎপাদন দুই শতাংশ বাড়াতে পারে এবং বিদ্যুৎ খরচ হ্রাস করতে পারে”।
একটি দায়িত্বশীল কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান হিসেবে হুয়াওয়ের মূল লক্ষ্য কার্বন নিঃসরণ হ্রাস, নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি এবং পুনরুৎপাদনশীল অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় আরও বেশি অবদান রাখা। কার্বন নিঃসরণ হ্রাসের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে গত বছর হুয়াওয়ে এর শীর্ষ ১০০ সাপ্লায়ারের মধ্যে ৯৩টির সাথে কাজ করে। হুয়াওয়ে ক্যাম্পাসের পিভি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো এক কোটি ২৬ লাখ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে। ৬২০,০০০ টনের অধিক কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে ১৫৫ কোটি কিলোওয়াট ঘন্টা ক্লিন এনার্জি (পরিবেশবান্ধব জ্বালানি) ব্যবহৃত হয়। ডিভাইস রিসাইক্লিং কর্মসূচি ৪৮টি দেশ এবং অঞ্চলে অনুষ্ঠিত হয় এবং ৪,৫০০ টনের বেশি ইলেকট্রনিক বর্জ্য পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে। গত বছর জলবায়ু পরিবর্তনে ভূমিকা রাখার ব্যাপারে কার্বন ডিসক্লোজার প্রোজেক্টের (সিডিপি) প্রকাশিত তালিকার ৯,০০০ প্রতিষ্ঠানের মাঝে ‘এ লিস্ট’ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে প্রথম ৫০০ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে হুয়াওয়ে স্থান দখল করে।
এ অনুষ্ঠানে বিখ্যাত নেতৃবৃন্দ এবং উচ্চ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাগণ অংশগ্রহণ করেন। এদের মধ্যে ছিলেন দ্য প্রিন্স অব ওয়েলস, কোস্টারিকার প্রেসিডেন্ট কার্লোস আলভারাডো কেসাডা, স্পেনের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং অর্থনীতি ও ডিজিটাল রূপান্তর মন্ত্রী নাদিয়া কালভিনো, ইউরোপীয় কমিশনের এনভায়রনমেন্ট, ওশানস ও ফিশারিজের কমিশনার ভার্জিনিজেস সিঙ্কেভিয়াস, ইউএন গ্লোবাল কমপ্যাক্টের নির্বাহী পরিচালক সান্ডা ওজিয়াম্বো, লুক্সেমবার্গের অর্থমন্ত্রী পিয়ের গ্রামিগনা, নরওয়ের পেট্রোলিয়াম ও জ্বালানি মন্ত্রী টিনা ব্রু, জার্মানির পরিবেশ, প্রকৃতি সংরক্ষণ ও পারমানবিক নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের স্টেট সেক্রেটারি জোচেন ফ্ল্যাসবার্থ, বেলজিয়ামের অর্থনীতি ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এবং কৌশলগত বিনিয়োগের স্টেট সেক্রেটারি টমাস ডারমিন, এবং ইউরোপীয় কমিশনের ফরেন পলিসি ইন্সট্রুমেন্টস (এফপিআই)-এর প্রধান হিলডে হার্ডম্যান প্রমুখ।
রয়টার্স ইভেন্টস সাস্টেইনেবল বিজনেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক লিয়াম দাউদ বলেন, ‘রেসপনসিবল বিজনেস ২০২১ ব্যবসার বেশ কিছু বিষয় নিয়ে পুনরায় চিন্তা করার প্রয়োজনীয়তা স্পষ্টভাবে তুলে ধরে। অনুষ্ঠানটি সকল অংশীজনদের মাঝে সুনির্দিষ্ট নতুন কার্যক্রম, অংশীদারিত্বের নতুন উপায় এবং উন্মুক্ত উদ্ভাবনের জন্য একটি অসাধারণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে। হুয়াওয়ের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো যথাযথ রূপান্তর নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের রূপান্তরে রোল মডেল হিসেবে কাজ করতে পারে।’