করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও চলতি অর্থবছরের প্রথম অর্ধবার্ষিকে (জুলাই-ডিসেম্বর, ২০২০) পুঁজিবাজারে প্রকৌশল খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের কর পরবর্তী মুনাফা হয়েছে ৬৪৬ কোটি ৩৩ লাখ ৮৮ হাজার ৬৯১ টাকা। যা কিনা আগের অর্থবছরের একই সময়ের মুনাফার চেয়ে ৩০ কোটি টাকা বেশি। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় নেওয়া সুদক্ষ ব্যবসায়িক পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়নের ফলে মুনাফার প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, করোনা মহামারির প্রকোপ কাটিয়ে মুনাফার প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে চলতি হিসাব বছরের শুরু থেকেই কৌশলগত ব্যবসায়িক পরিকল্পনা হাতে নেয় ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ। ফলে গত বছরের মাঝামাঝি করোনার লকডাউন শেষে ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালু হতেই পণ্য বিক্রিতে স্বাভাবিক ধারায় ফিরে আসে দেশের এই ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট। যার পরিপ্রেক্ষিতে চলতি হিসাব বছরের প্রথম অর্ধবার্ষিকে (জুলাই-ডিসেম্বর, ২০২০) কোম্পানির কর পরবর্তী মুনাফা হয়েছে ৬৪৬ কোটি ৩৩ লাখ ৮৮ হাজার ৬৯১ টাকা। আগের অর্থ বছরের একই সময়ে অর্থাৎ জুলাই-ডিসেম্বর, ২০১৯ সময়ে কোম্পানির কর পরবর্তী মুনাফা ৬১৬ কোটি ২৮ লাখ ১ হাজার ৪৬৭ টাকার। সে হিসাবে ২০২১ হিসাব বছরের প্রথম অর্ধবার্ষিকে কোম্পানির মুনাফা বেড়েছে ৩০ কোটি ৫ লাখ ৮৭ হাজার ২১৫ টাকা।
ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ কর্তৃপক্ষ জানায়, চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় অর্ধবার্ষিকেও মুনাফা প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা বজায় রাখার লক্ষ্যে ২০২১ সালকে ‘ব্র্যান্ডিং ইয়ার’ ঘোষণা করেছে কোম্পানিটি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এই বছরের শুরু থেকেই কোম্পানি দেশব্যাপী ডিজিটাল ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ফ্রিজ, টিভি, ওয়াশিং মেশিন ইত্যাদি পণ্যের ব্যাপক ব্র্যান্ডিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
কোম্পানি কর্তৃপক্ষের দাবি, পরিচালনা পর্ষদের নেওয়া কৌশলগত ব্যবসায়িক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলে চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় অর্ধবার্ষিকেও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা পূরণ করা সম্ভব হবে।
তথ্য মতে, ২০২১ হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর, ২০২০) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৮ টাকা। আগের বছরের একই সময়ে ইপিএস ছিল ৫.১৭ টাকা। আর দুই প্রান্তিক মিলে অর্থাৎ ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর, ২০২০) ইপিএস হয়েছে ২১.৩৪ টাকা। আগের বছরের একই সময়ে ইপিএস ছিল ২০.৩৪ টাকা।
এছাড়া, ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুনর্মূল্যায়ন করা শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২৮৭.৯৪ টাকা। আর ২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত এনএভিপিএস ছিল ২৬১.৯২ টাকা।
করোনাকালেও এমন প্রবৃদ্ধি অর্জন কীভাবে সম্ভব হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী গোলাম মুর্শেদ বলেন, ‘করোনার মধ্যেও প্রথম অর্ধবার্ষিকে ৩০ কোটি টাকারও বেশি মুনাফার পেছনে আছে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ। ওয়ালটনের ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা যাতে লাভবান হন, সে উদ্দেশ্যে কোম্পানির ব্যবসায়িক পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে এবং সে অনুযায়ী আমরা কাজ করেছি। এই ধারাবাহিকতায় মুনাফার প্রবৃদ্ধি আরো বাড়ানোর জন্য ২০২১ সালকে ‘ব্র্যান্ডিং ইয়ার’ ঘোষণা করা হয়েছে। সেজন্য শুধু রেফ্রিজারেটরই নয়, বরং ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের সব ধরনের পণ্যের সর্বোচ্চ মার্কেট শেয়ার নিশ্চিতে ব্যাপক পরিকল্পনা নিয়ে আমরা কাজ করছি। চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় অর্ধবার্ষিকেও আমরা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ অক্ষুণ্ন রাখার চেষ্টা করে যাবো।’