Written by 2:49 pm Blog

What About Human Attention in an Advertisement?

advertising agency
Walton and Herlan Ads

What About Human Attention in an Advertisement?

পৃথিবী এক অদ্ভুত সময়ে। আজকে থেকে বিশ বছর আছে মানুষের এটেনশন স্প্যান ছিল ২০ সেকেন্ড। বর্তমানে ৮ সেকেন্ড। যেখানে গোল্ডফিশের ৯ সেকেন্ড। প্রশ্ন হচ্ছে, এত শর্ট এটেনশন স্প্যানের জেনারেশনের এটেনশন একটা ব্র্যান্ড কিভাবে পাবে?

ফেসবুক স্টোরি খুলুন। ইনস্ট্রাগ্রাম, স্ন্যাপচ্যাট খুলুন। দেখবেন, খাপে খাপ আট সেকেন্ডে অটো সোয়াইপ হয়ে যাচ্ছে। যেগুলো লম্বা ভিডিও সেগুলোও আপনি মনের অজান্তেই আট সেকেন্ডে সোয়াইপ করে ফেলছেন। টিকটকের জন্মই হয়েছে শর্ট এটেনশন স্প্যানের বদৌলতে। অন্য সোশ্যাল মিডিয়াগুলি শর্ট ব্যাপারটা আন্দাজ করলেও যে, এত বাস্তব বুঝে নাই। বোঝার আগেই টিকটকের জন্ম হয়েছে। টুইটারের জন্মও একই কারণে। একশো বিশ শব্দের লিমিটেশন।

মজার ব্যাপার হচ্ছে এটেনশন টাইম আরও কমছে। মানুষের সাথে সাথে কোম্পানিগুলোও দেখবেন আগামী কয়েকবছরে এটা মেনে নিবে। স্টোরি চার সেকেন্ডে সোয়াইপ হয়ে যাবে। ফেসবুকও কয়েকশো শব্দের মধ্যে পোস্ট শেষ করতে বলবে। অলরেডি, বড় লেখার রিচ কমিয়ে শর্ট লেখার রিচ বাড়িয়ে দিয়েছে। কিছুদিন আগে আমি মজা করে বলেছিলাম, এখনই সময়… এক সেকেন্ডের স্টোরির একটা প্ল্যাটফর্ম বানানোর। এক সেকেন্ডের মধ্যে ছবি অটোসোয়াইপ হয়ে যাবে। বানালেই হিট। নাম দিতে হবে পলক। পড়ে না চোখের পলকের নামের সাথে মিলিয়ে। রিয়াজ হবে ব্র্যান্ড এম্বাসেডর!

এ বিষয়ে আমার ব্যক্তিগত কিছু কাউন্টার ইনটুইটিভ মতামত আছে। আমার মতে, ব্র্যান্ড কমিউনিকেশনের সময় এটেনশন স্প্যান হিসেবে রাখা প্রথম কাজ। যেটা কম ব্র্যান্ড ম্যানেজারই সম্ভবত মাথায় রাখেন। নাহলে হাতি মার্কা কনটেন্ট বানাতেন না। একটু বেশি ফোকাসড, মিনিমাল এবং শর্ট থাকতেন। আপনার মেসেজ যদি আট সেকেন্ডের মধ্যে লাউড এন্ড ক্লিয়ার না হয়, আপনার মেসেজ জোর করে হয়ত মানুষকে দেখাতে পারবেন, এটেনশনটা পাবেন না। আর এটেনশন না পেলে পুরো জিনিসটা অর্থ এবং সময় অপচয়। এটেনশন এত দামী একটা জিনিস, যেটা পাওয়ার জন্যে মার্কেটিং এর জগতে অবিশ্বাস্য অবিশ্বাস্য কাজ হয়েছে। ভক্সওয়াগন রঙিন ম্যাগাজিনে উল্টো বেশি টাকা দিয়ে সাদাকালো বিজ্ঞাপন ছেপেছিল। সেখানে আবার লোগোকে রেশিও না মেনে একটু অন্য পজিশনে প্লেস করেছিল। এমন পজিশনে যে দেখতে চোখে লাগে। পাবলিক স্ট্যান্ট, শকিং পরিসংখ্যান এরকম আরও কত কি? কিন্তু যুগ বদলেছে। এখন প্রতিটা সেকেন্ডই এটেনশন ধরে রাখার যুদ্ধ শুরু হয়ে গিয়েছে। কদাচিৎ না।

advertising agency

এটেনশন স্প্যান ধরে রাখার কয়েকটা ক্লাসিক উপায় আছে। প্রথম উপায় সবাই জানে। কিপ ইট শর্ট। এত শর্ট যে এর চেয়ে শর্ট করলে মিনিংলেস হয়ে যাবে। নাসা যেভাবে স্পেসশিপকে হালকা করার জন্যে এক গ্রামেরও হিসেব করে, আপনি হিসেব করবেন শব্দে, দাঁড়ি-কমা, সেমিক্লোনে। ভিডিও দৃশ্যে, কালারে, সংলাপে এবং চরিত্রে। সবচেয়ে সেরা কোম্পানি গুলোর সেরা ব্র্যান্ড কমিউনিকেশনে দেখবেন এক ফোঁটা চর্বিও নেই। একদম ফোকাসড। যেমন এপল। যত এমেচার কোম্পানি তাঁর কমিউনিকেশনে তত চর্বি। তত বড়। তত কম ফোকাসড।

দ্বিতীয়ত একটা গল্প বলা। স্টোরিটেলিং আরকি। গল্প ম্যাজিকাল একটা ব্যাপার। গল্প মানুষের মস্তিষ্কে সরাসরি একশন করে। গল্প বলার সময় খেয়াল রাখতে হবে, স্বরে আ তে আম। আমটি আমি খাবো পেড়ে টাইপের কিছু যেন না হয়ে যায়। যেখানে স্পষ্ট বোঝা যায় যে গল্পের নামে কৌশলে ইনফরমেশন গেলানো হচ্ছে। গল্প বলা হচ্ছে না। গল্প শুরু হবে কৌতূহল উস্কে দিয়ে। শেষ হবে সাইকোলজি বইয়ের পাঁচটা ইমোশনের যেকোন একটা দিয়ে। আনন্দ, দুঃখ, ভয়, রাগ এবং বিরক্তি। এই পাঁচটা ইমোশনের ক্যাটাগরির মধ্যে আবার গোটা পঞ্চাশেক ইমোশন পড়ে। গল্পটা কয়েকটা ইমোশন মিলিয়েও হতে পারে।

মার্কেটে চলা নব্বুই ভাগ কমিউনেকেশনে জাস্ট মানুষের এনজয়মেন্ট বা আনন্দ নামের ইমোশনটা উস্কে দেয়া হয়। হ্যাঁ আপনি আনন্দ দিয়ে শেষ করেন, কিন্তু বাকি চারটাও যদি মাঝে বুদ্ধিমানের মত ব্যবহার করতে পারেন… গল্প হিট। আপনার কাস্টমাররা শিশু না যে সবসময় ভাল এবং পজিটিভ ইমোশন সাপ্লাই করতে হবে। ব্র্যান্ড কনসিসটেন্সি এবং টার্গেট ঠিক রেখে গল্প বলতে পারাটা একটা বিরাট মুনশিয়ানা। এমেচাররা এই কাজ করতে গিয়ে ব্যাকফায়ারও কম করে নি।

সোজা বাংলায়, আপনার ব্র্যান্ড জাস্ট একটা ন্যারেটিভ। ব্র্যান্ডকে সবসময় আমি একটা ছোট গল্প বলে ভাবি। রাস্তা থেকে একটা লোককে ধরে যদি বলি, এই ব্র্যান্ডটা চিনেন? সে যদি বলে চিনি। এরপরে যদি প্রশ্ন করি ঐ ব্র্যান্ড সম্পর্কে কি জানেন? সে যা বলবে সেটা খাতায় লিখলে দেখবেন এটা আসলে ছোট একটা গল্প। ন্যারেটিভ। মজার ব্যাপার হচ্ছে, বেশিরভাগ মানুষের ন্যারেটিভ একই।

আপনি ব্র্যান্ড কমিউনিকেশন শুরু করবেন। মানুষ দেখবে। দেখে নিজের মত একটা ন্যারেটিভ বা ছোট গল্প দাঁড়া করাবে। নিজের ন্যারেটিভ আরেকজনকে বলবে। না মিললে দুইজন তর্ক করবে। এরপরে দিনশেষে কাটছাঁট হয়ে প্রায় একইরকম হয়ে যাবে ন্যারেটিভটা। সবারটা মোটামুটি এক। খেয়াল করলে দেখবেন, টুইটারের একশো বিশ শব্দের লিমিটের মত, বর্তমানে মানুষের মাথার ন্যারেটিভটাও অসম্ভব ছোট। কারণ, ঐটাই। এটেনশন স্প্যান পড়ে গিয়েছে। এই ছোট গল্প আরও ছোট হবে। পুরাতন ব্র্যান্ডের গল্পগুলো একটু বড়। কারণ, তাঁরা যখন গল্পগুলো আমাদের মাথায় গেঁথেছিল, তখন মানুষের এটেনশন স্প্যান কয়েকগুণ বেশি ছিল। কিন্তু নতুন দিনের ব্র্যান্ড সবগুলোরই একই অবস্থা। কয়েক লাইনের একটা গল্প বলতে পারবে দেখবেন। এর বেশি পারবে না। জিজ্ঞেস করে দেখেন!

ফাইনালি, নিঃসন্দেহে আপনার ব্র্যান্ডের গল্পটা ছোট না। প্রোডাক্ট কিংবা সার্ভিস অনেকগুলো। সামারি করে সব কিছুকে জেনারালাইজ করলে ছোট হতে পারে। কিন্তু গল্পটা আসলে অনেক বড়। কিন্তু বড় গল্পও বলা যাচ্ছে না। উপায়? গল্পকে ভাঙুন। ছোট ছোট ভাগ করে ফেলেন। মনে করবেন এটা একটা টিভি সিরিজ। পর্বে পর্বের মত ছোট ছোট পার্টে গল্পটা বলেন। স্টোরি দেন, ওভিসি-পিভিসি বানান, কিন্তু গল্পকে আগান… কিন্তু মাথায় রাখবেন, গল্পের সুর যেন না কাটে। ব্র্যান্ড কনসিসটেন্সি যেন বজায় থাকে। কারণ, ভাল গল্পের মধ্যেও যদি কনসিসটেন্সি না থাকে, মানুষ সেটাকে খারাপ বলবে। পৃথিবীতে মানুষ খোঁজে প্যাটার্ন, কনসিসটেন্সি। সৌরজগতের একটা গ্রহও যদি আধা ইঞ্চি এদিক ওদিকে থাকে, সব ভণ্ডুল হয়ে যাবে। সবাই যে জায়গায় হিমশিম খায় সেটা হচ্ছে গল্পের এই সুরটা ধরে রাখতে। ব্র্যান্ড কমিউনিকেশন বা পার্সোনালিটির সেই অবিশ্বাস্য কনসিসটেন্সি বা প্যাটার্নটা ধরে রাখতে। গল্প ভেঙে ছোট ছোট করে বলার সময় এটা মাথায় রাখা চাই সবচেয়ে বেশি।

আর শেষ কথা, আমি বলছি না। এটেনশন স্প্যানের হিসেব রাখাটাই সব। কিন্তু, মানুষের এটেনশনই যদি না থাকে, আপনার অন্য সব ব্র্যান্ডিং ল, স্ট্রাটেজি, প্লেসমেন্ট এগুলো কি কাজে আসবে। বিলিভ মি, আমাদের বর্তমান জেনারেশনের এটেনশন স্প্যানের বারোটা ইন্টারনেট সোশ্যাল মিডিয়া বাজিয়ে ছেড়েছে। নতুন যুগের কাস্টমার জেনারেশন জি’র আরও বেশি। আপনি-আমি যতটুকু ভাবছি, তার চেয়েও বেশি। আপনি পুরো পোস্টের প্রত্যেকটা শব্দের সাথে দ্বিমত পোষণ করতে পারেন, কিন্তু একটা জিনিসের সাথে দ্বিমত হতে পারবেন না যে, শর্ট এটেনশন স্প্যানের কারণে ভবিষ্যতে পুরো ব্র্যান্ড কমিউনিকেশনে এ ব্যাপক একটা পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী।

শেষ কথা, আপনারা যারা এড বানান, প্লিজ ভাই একটু ছোট করেন। আমাদের আমজনতার আপনার জন্যে কয়েক সেকেন্ডের বেশি সময় নেই। এর মধ্যে এটেনশন গ্র্যাব করে এনগেজ করে ফেলতে পারলে ভাল। নাহলে বিদায়। আর আগের যুগ নাই যে, আপনার প্রোডাক্ট ভাল হলেই আমরা কিনবো। কারণ, বাজারে এখন অনেক অল্টারনেটিভ। আর, আপনারা আমাদের বিশ্বাস নিয়া এতই খেলছেন যে, নিজেদেরকে সেরা বলে যা যা বলেন কোনটাই বিশ্বাস করতে পারি না। বন্ধুরে জিজ্ঞাসা করি। রিভিউ দেখি। আশেপাশের মানুষ কিনছে না কি দেখি। আর ভাই, প্লিজ আপনার প্রোডাক্ট সম্পর্কে নতুন কোন ইনফরমেশনও আপাতত জোর করে দিয়েন না। সকাল থেকে কয়েকশো জন দিছে। কিচ্ছু মনে নাই। ইনফরমেশন পরের কথা, নামই মনে নাই। দিনশেষে, আমরা তাঁদেরটাই লং-টার্মে কিনবো যাদের সাথে ইমোশনালি এটাচড হব। তাও পার্সোনাল লেভেলে। তারপর আমরাই আপনারে খুঁজে বাকি ইনফরমেশন জেনে নিব। এখন বলেন, আপনার গল্প। স্টপওয়াচ চালু করলাম। এক, দুই, তিন, চার… এ কি মহাভারত শুরু করলেন। সাইড দেন। এ্যাই, নেক্সট জন আসেন। শুরু করেন, আপনার গল্প…

Share this on
Close