The Interesting Case of Visual Merchandising & Amp; ACI Pure Spice
পণ্য কেনার ক্ষেত্রে পয়েন্ট অফ সেলস ক্রেতার সাইকোলজি তে অনেক বড় প্রভাব বিস্তার করে থাকে। পণ্য কেনার প্ল্যানিং থেকে শুরু করে, ফাইনাল ডিসিশন নেয়া পর্যন্ত পয়েন্ট অফ সেলস এর ভুমিকা ব্যাপক। কিন্তু এর কার্যকারিতা এর দিকে খেয়াল করলে দেখা যায় বেশীরভাগ কোম্পানিই গতানুগতিক ধারার প্রাকটিস চালিয়ে যাচ্ছেন কিন্তু এই বছরের শুরুতে দেখা গেল নতুন এক ধারায় একটি অসাধারণ প্রযুক্তির ব্যবহার কে। আর এই কেইস স্টাডি টাও লেখা এই ব্যাপারটি কে কেন্দ্র করেই, লিখেছেন – ফরহাদ রাকিব।
পয়েন্ট অফ সেলস, রিটেইল, ট্রেড বা মুদি দোকান যাই বলি না কেন সেখানে এখন পর্যন্ত গতানুগতিক ধারার ব্র্যান্ডিং এর বাইরে তেমন কিছু অন্তত গত বছর পর্যন্ত ছিলো না। সেই ঘুরেফিরে পিভিসি শপ সাইন, ব্যানার, ড্যাংলার, স্টিকার এইটুকু পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থেকেছে ট্রেড মার্কেটিং। শপ সাইন ছাড়া বাকি গুলোর হদিস মাস দুয়েক পরে আর পাওয়া যায় না। এর কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখলাম হয় নির্ধারিত ব্র্যান্ডের ওই সীমিত আকারের ব্র্যান্ডিং গুলো ডিউরেবল না যার কারণে কয়দিন পর ছিঁড়ে গিয়ে নাই হয়ে যায় কিংবা প্রতিযোগীতামূলক বাজারে প্রতিদ্বন্দ্বী ব্র্যান্ডের SR এসে ছিঁড়ে দিয়ে যায়। যার কারণে ট্রেডে প্রতিবছর কোটি কোটি টাকার এইসব ব্র্যান্ডিং কনজিউমারের কাছে পণ্যের খবর ঠিকমত পৌঁছাতে পারেনা। এই ধারণা থেকেই ট্রেডে এইসব স্ট্যাটিক ব্র্যান্ডিং কে রিপ্লেস করে ডায়নামিক ব্র্যান্ডিং আনার পরিকল্পনা নিয়ে AdRent এর উত্থান। বাইরের দেশে, স্পেশালি ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকাতে ভিজ্যুয়াল মার্চেন্ডাইজিং স্ক্রিনগুলো চলে রিমোট সফটওয়্যারের মাধ্যমে। একটা সেন্ট্রাল কমান্ড প্যানেল থেকে ইন্টারনেট সংযুক্ত রিমোট স্ক্রিনগুলোতে কমান্ড পাঠিয়ে চালানো হয় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের কমার্শিয়াল। এই প্রযুক্তি নিয়েই বাংলাদেশে মাঠে নেমেছে AdRent. তবে, বাইরের দেশে এই প্রযুক্তির ব্যবহার শপিং মল গুলোতে ব্যবহৃত হলেও বাংলাদেশে সেই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে মূলত রিটেইল বা মুদি দোকান গুলোতে।
একটা নির্দিষ্ট সাইজের স্ক্রিনকে স্টোর ফ্রন্ট পজিশনে প্লেস করার পর সেটিকে ইন্টারনেট কানেক্ট করে নিজস্ব সফটওয়্যারের মাধ্যমে একই পদ্ধতিতে সেন্ট্রাল কমান্ড থেকে মূলত এফএমসিজি ব্র্যান্ডগুলোর পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রচার করছে অ্যাডরেন্ট। সমগ্র মিরপুর এলাকায় অনেক যাচাই বাছাই এর পর বেছে নেয়া ১০০ মুদি দোকানে ১০০ টি আলাদা স্ক্রিনে এই সার্ভিস চালু করা হয়েছে। প্রশ্ন আসতে পারে, মিরপুর কেন? উত্তর হচ্ছে, ঢাকা শহরের আড়াই কোটি মানুষের মধ্যে ২১ শতাংশের বসবাস মিরপুরে। ২০১৯ সালের ওয়ার্ল্ড পপুলেশন ভিউ জার্নালের রিপোর্ট অনুযায়ী মিরপুরে ৫১ লক্ষ মানুষের বসবাস। এই এলাকার জনসংখ্যার ঘনত্ব ঢাকা শহরের অন্য যে কোন এলাকার চাইতে বেশি। আরো একটা কারণ আছে, অ্যাডরেন্ট এর সার্ভের হিসাবে মিরপুরের মানুষের ডেইলি প্রোডাক্ট বায়িং হ্যাবিট এখনো মুদি দোকানের উপর নির্ভরশীল। হাতে গোণা কয়েকটি সুপারশপ থাকলেও সেখানে যাওয়া ক্রেতার পরিমাণ মোট ক্রেতার পরিমাণের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য। বাকি ক্রেতারা এখনো বাসার কাছের মুদি দোকান থেকে দৈনিক প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পছন্দ করে। এই হ্যাবিট কে প্রাধান্য দিয়েই সমগ্র মিরপুরের ২২টি আলাদা জোনে বেছে নেয়া হয়েছে মোট ১০০টি মুদি দোকান।
এবার আসা যাক ACI Pure Spice ইন্টারেস্টিং কেইস স্টাডিতে।
২০১৯ এর শেষের দিকে এসিআই এর সাথে অ্যাডরেন্ট যখন যোগাযোগ করে সেই মুহুর্তে অ্যাডরেন্ট এর ফিল্ড সার্ভে রিপোর্ট বলে যে মিরপুরের ট্রেড মার্কেটে এসিআই স্পাইস এর মশলা পণ্যের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। এর কারণ হিসেবে দেখা হয় প্রতিদ্বন্দ্বী স্কয়ার ফুডস প্রোডাক্টস এর জনপ্রিয় পণ্য রাঁধুনির শক্তিশালী অবস্থান, এসিআই এর দূর্বল ডিস্ট্রিবিউশন চ্যানেল এবং দোকানদারদের সাথে ভালো সম্পর্কের অভাব। এই কারণ গুলো মিলিয়ে মিরপুরের মার্কেটে এসিআই এর অন্যান্য পণ্যগুলো ভালো চললেও মশলা পণ্যের বিক্রি প্রায় শুণ্যের কাছাকাছি।
এই জিনিসগুলোই তুলে ধরা হয় এসিআই এর ব্র্যান্ড টিমের সাথে। অ্যাডরেন্ট টিম সাজেস্ট করে যে মিরপুরের ১০০ স্ক্রিনে এসিআই স্পাইস তাদের কমিউনেকশন গুলো প্রচার করবে এবং সেই ১০০ দোকানে অ্যাডরেন্ট টিম দোকানদের সাথে কথা বলে এবং ডিস্ট্রিবিউশন টিমকে ট্যাগ করে এসিআই এর মশলাপণ্য দোকানে রাখতে সাহায্য করবে।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে অ্যাডরেন্ট সফলতার সাথে এসিআই স্পাইসের ক্যাম্পেইন লঞ্চ এবং ১০০ দোকানে এসিআই এর মশলা পণ্য স্টক করতে ডিস্ট্রিবিউশন টিমকে সহায়তা করে। ২০২০ সালের মার্চ মাসে করোনাভাইরাসের কারণে লকডাউন শুরু হওয়ার আগে অ্যাডরেন্ট টিম ১ মাসে এসিআই ক্যাম্পেইনের ফিডব্যাকের জন্য আরেকটি মার্কেট সার্ভে করে। সেই সার্ভে অনুযায়ী দোকানে এসিআই এর মশলা পণ্য স্টক এবং স্ক্রিনে ক্যাম্পেইন চালানোর পর ১০০ দোকানের প্রতিটিতে অন এভারেজে ৩০০০ টাকার এসিআই মশলা পণ্য বিক্রি হয়। এবং ১০০ দোকানে সর্বমোট ৩০৩,৫০০ টাকার এসিআই মশলা পণ্য বিক্রি হয়। এই পজিটিভ ফিডব্যাকের পর এসিআই ক্যাম্পেইন চালু রাখতে চাইলেও দূর্ভাগ্যবশত করোনাভাইরাস লকডাউনের কারণে মার্চ ২০, ২০২০ থেকে অপারেশন হোল্ড করতে বাধ্য হয়েছিলো অ্যাডরেন্ট।
অক্টোবর ২০২০ থেকে লকডাউন তুলে দেয়ার পর অ্যাডরেন্ট আবারও অপারেশন চালু করে। এরপর পুনরায় এসিআই এর ব্র্যান্ডিং টিমের সাথে কলাবোরেটের মাধ্যমে অ্যাডরেন্ট পুনরায় ১০০ দোকানে এসিআই এর পণ্য তুলতে ডিস্ট্রিবিউশন টিমকে সাহায্য করে। গত অক্টোবর থেকে জানুয়ারী পর্যন্ত এসিআই এর পাশাপাশি অ্যাডরেন্ট এর স্ক্রিনে স্ট্যান্ডার্ড ফিনিশ অয়েল কো. এবং নেসলে ম্যাগি, নেসলে নিডো ও নেসক্যাফের ক্যাম্পেইন সফলভাবে পরিচালিত হয়েছে।