What’s the Reason Behind the Lacking of Digital Marketing 2021?
গত দেড় বছরে যত কোর্স হয়েছে তার মধ্যে সব চেয়ে বেশী মানুষ যেই কোর্সটি করেছে সেটা হল ডিজিটাল মার্কেটিং, কিন্তু তারপরেও এই সেক্টরে মানুষ পাওয়া যাচ্ছে না। এর কারণ কি?
আমি শেষ ২ মাসে ১ টা এজেন্সি আর ২ টা ব্র্যান্ডের জন্য ইন্টারভিউ Board এ ছিলাম এই ডিজিটাল ম্যানেজার হায়ারের জন্য। সমস্যাগুলো কি কি ? সবাই কম বেশী আসলেই শেষ এক দেড় বছরেই কোর্স গুলো করেছে কিন্তু তাও কেন জানি আমরা মনের মত ক্যান্ডিডেট পেলাম না যাকে নিয়োগ দেয়া যায়। নিজের ব্যাক্তিগত মতামতের ভিত্তিতে কিছু কথা বলতে চাই তাই কারো সাথে না মিললে শ্রদ্ধা নিয়ে এড়িয়ে যেতে পারেন।
ডিজিটাল মার্কেটিং করতে গিয়ে মার্কেটিংকে ভুলে যাওয়া
প্রথমেই যেই সমস্যা সেটা হল ডিজিটাল মার্কেটিং করতে গিয়ে মার্কেটিংকে ভুলে যাওয়া। আসলে এখানে অনেক বড় একটা জায়গা হল মার্কেটিং, অর্থনীতি আর ম্যাথকে বোঝা। সবাই কেন জানি শুধু ফেইসবুক আর ভাইরাল স্টোরি নিয়েই পড়ে থাকে। এর কারণ হয়তো আমরা ধরেই নিয়েছে ডিজিটাল মার্কেটিং মানে হচ্ছে বছরে ২-৩ টা ভাইরাল টাইপ ভিডিও ( যাকে ওভিসি বলা হয়) বানানো, এমন টাই সবাই বুঝতেছে আজকাল। কিন্তু মার্কেটিং এর কোর জায়গাটা আগে বুঝতে আর জানতে হবে। জী, আপনি যদি ব্র্যান্ডের ডিজিটাল ডিভিশনের দায়িত্তে থাকেন তাহলেও আপনাকে বিজনেস অবজেক্টিভ আর মার্কেটিং অবজেক্টিভ কি জিনিস বুঝতে হবে। আপনি হয়তো ডিজিটাল টাই দেখবেন কিন্তু আপনি যদি মেইন মার্কেটিং গোলটা না জানেন বা ফানেলটা না বুঝেন তবে কীভাবে ডিজিটাল মিডিয়া কিংবা কনটেন্ট এ নিজের রোল প্লে করবেন কিংবা করাবেন।
দ্বিতীয় একটা ব্যাপার থাকে পারসোনা কিংবা নিজের অডিয়েন্স নিয়ে ডিটেইল না জানতে চাওয়ার ইচ্ছে। আমরা একটা কে বলি ড্রিম কাস্টমার। মানে আপনার কাস্টমারকে নিয়ে আভাটার বানিয়ে ফেলা। কারণ যখন আপনি এটা করতে পারবেন তখন ই আপনি কনটেন্ট কেমন হবে আর মিডিয়া কি হবে সেটা বুঝতে পারবেন আর সেখানে প্লেসমেন্ট পেলেই আপনার পণ্যের জায়গা হবে মানুষের বায়িং সাইকেলের যেকোনো একটা স্টেজে। মানুষ আসলে ডিরেক্ট পন্য কেনে না, মানুষ সিধান্ত নেবার আগে অনেকগুলো স্টেজ পার করে। আপনার কাজ হচ্ছে সেই মানুষকে বোঝা আর সেই স্টেজগুলা বুঝা।
তৃতীয় হচ্ছে, মিডিয়া মানেই ফেসবুককে বুঝতে পারা, এটা চরম একটি ভুল। আমিও মানি ফেসবুকে দেশের মানুষের এঙ্গেজমেন্ট অনেক বেশী কিন্তু আপনি যদি নিজের ব্র্যান্ডকে টপ অফ মাইন্ডে নিয়ে যেতে চান তবে আপনাকে স্ট্র্যাটেজিক্যালি নিজের কোর মেসেজ নিয়ে হাজির হতে হবে। ফেসবুক, ডিসপ্লে ছাড়া আরও কীভাবে নিজের ব্র্যান্ডকে নিয়ে কাজ করতে হবে সেই নলেজ আপনার শুধু থাকলেই হবে না সেটা দিয়ে কীভাবে নাম্বার বের করে আনবেন তাও জানতে হবে। উজাড় হাতে টাকা খরচ করলেই ব্র্যান্ড হয় না, এর পেছনে লজিকের অনেক জায়গা বানিয়ে নিতে হবে।
চতুর্থ হচ্ছে কনটেন্ট বুঝতে পারা। এটা বেশ ইম্পরট্যান্ট একটা জায়গা। কারণ টিভি কিংবা পেপারে যেভাবে কনটেন্ট কঞ্জিউম করা হয় ডিজিটাল মিডিয়াগুলোতে সেভাবে কনটেন্ট কঞ্জিউম করা হয় না। তাই এখানে পারসোনা আর মিডিয়া বুঝে কনটেন্ট আইডিয়াও আপনাকে দিতে হবে। কত রকমের কনটেন্ট হতে পারে সেটা যেমন জানতে হবে ঠিক তেমনি জানতে হবে কোন টোনের কনটেন্ট আপনার ব্র্যান্ডের জন্য পারফেক্ট।
পঞ্চম হচ্ছে ডিজিটাল পিআর বুঝতে পারা। এই জায়গায় আমি কাউকেই দেখলাম না তেমন কিছু জানতে। ডিজিটাল পিআর দারুন কাজ করে যদি আপনি জানেন কাকে নিয়ে আর কীভাবে পিআর শো বানাবেন। কারণ বাংলাদেশ ২-৩ দিনের হাইপের জায়গা এখন তাই আপনাকে বেশ দারুনভাবে এই জায়গায় নিজেকে প্লেস করতে হবে।
ষষ্ঠ হচ্ছে অল্টারনেটিভ মিডিয়া এন্ড কনটেন্ট। এই জায়গাটা অনেক ঘুমুটে কিন্তু যেহেতু আপনি আধুনিক এবং চোখ কান খোলা রাখা মানুষ তাই আপনাকে এই জায়গায় নিজের মেধা আর বুদ্ধিকে ইউজ করতে জানতে হবে। অল্টারনেটিভ মিডিয়া মানে হচ্ছে গতানুগতিক ডিজিটাল মিডিয়ার বাইরে গিয়ে কিংবা যেই মিডিয়া কাজ করছে তার অল্টানেটিভ ব্যবহার। সেই সাথে এই মিডিয়া থেকে অঙ্ক কিংবা নাম্বার বের করে আনা। অনেকেই ছিলেন যাদের জিজ্ঞেস করলাম প্রোগ্রাম্যাটিক অ্যাড নিয়ে আপনার কি জানা আছে, অনেকেই তেমন কিছু বলতে পারলেন না। কারণ আপনি ডিজিটাল মানেই ধরে রেখেছেন ফেবু আর গুগোল, এটা আমিও মানি যে কনভার্সন ফোকাস কাজ করতে গেলে এই ২টা বেশ ভাল জায়গা কিন্তু ব্র্যান্ড মার্কেটিং এর জন্য আপনাকে শুধু এই ২ মিডিয়া না আপনাকে সব কিছুতেই একটা ফানেল মেনে কাজ করতে হবে।
শেষ হচ্ছে বিক্রিতেও নিজেকে ইনভল্ভ করা। এটা অনেকেই মিস করে যান, আপনার জন্য কিংবা আপনার টিমের কাজের জন্য যখন সেলস শীটে অনেক বড় কোন ইম্প্যাক্ট পড়বে তখন ই হবে আপনার জয়। আপনি ডিজিটাল ম্যানেজার কিংবা হেড অফ ডিজিটাল হিসেবে ডিরেক্ট সেলসেও দারুন ইম্প্যাক্ট ফেলতে পারবেন।
এডিশনাল কিছু পয়েন্টের মধ্যে যা না বললেই না সেটা হল ইউএক্স বুঝতে পারা , আমি বলছিনা আপনাকে এক্সপার্ট হতে হবে। কিন্তু একদম সাধারন কিছু বিষয় আপনি স্টাডি করে শিখে নিলে সেটার ব্যবহার করতে পারবেন। আল্টারনেটিভ মিডিয়া আর সেটার ব্যবহার জানতে হবে আর সেখান থেকে অঙ্ক বের করে আনতে হবে।
মোট কথা, আপনাকে ডিজিটাল মার্কেটিং করতে হলে মার্কেটিং কি সেটা আগে বুঝতে হবে , দেন বুঝতে হবে ইন্ডিভিজুয়াল মার্কেট, তারপর বুঝতে হবে কনটেন্ট, তারপর মিডিয়া আর সব কিছুর ভিত্তি হবে আপনার ব্র্যান্ডের বিজনেস আর মার্কেটিং অব্জেক্টিভের উপরে।
তাই কোর্স যাই করেন সেই কোর্স শুধু যদি ফেবু আর গুগলের অ্যাড অপ্সের কাজ হয় তবে আপনি হয়তো কিছুদিন কাজ পাবেন কিন্তু আপনি অফিসের ইম্প্যাক্টর হতে পারবেন না। মানে কিছুদিন পরে আপনার মনে হবে আপনি তেমন কিছুই করছেন না। একই সাথে দুনিয়ায়তে কি চলছে তার খোঁজ খবর রাখাই আপনার একটা বড় কাজ।
খুব সহজ একটা উদাহরণ দেই তাহলে বুঝবেন কীভাবে অডিয়েন্স আর ব্র্যান্ড কমের চেঞ্জ আসে। ৯০ দশকে যারা মা ছিলেন মানে আমাদের মা তারা কেমন ছিলেন, তাদের সময়ে মিডিয়া কি ছিল আর ২০২১ সালে আমাদের বউ মানে আমাদের বাচ্চার মা ( আমি এখনো সিঙ্গেল যদিও) কেমন আছে আর তাদের মিডিয়া কি? তফাৎ আছে না? অনেক তফাৎ কিন্তু দুধ খেলে শরীর ভালো থাকে এটা কিন্তু মিথ্যে না তাহলে সেই দুধের জন্য কাজ করতে হলে আপনাকে এখন নতুন করে ভাবতে হবে আর এটা শুরু প্যাকেজিং থেকে ডোর পর্যন্ত হতে হবে। এই উদাহরণ সব জায়গায় প্রযোজ্য।
আমি নিজেও প্রতিনিয়ত শেখার মানুষ, প্রতিদিন নতুন অনেক কিছুই শিখি সেটা নিয়ে কাছের মানুষদের কাছে তর্ক বিতর্ক করি কারণ জানাটা বেশ পোক্ত হয় আমার। আপনিও তেমন ইন্টারেস্টিং কিছু কি করেন? আমি যখন এই ইন্টারভিউগুলো নেই, তখন জিজ্ঞেস করি আপনি কি ধরনের বই পড়েন, কি ধরনের মুভি দেখেন, শেষ কি বই পড়েছেন আর শেষ কি মুভি দেখেছেন– এই প্রশ্নের উত্তর আমার অনেক কাজকে সহজ করে দেয়। আমি মনে করি ইন্টারভিউতেই অনেক চেঞ্জ আনা দরকার কারণ আমি আমার কাজের দায়িত্ব যেই মানুষকে দিচ্ছি তাকে পুরোপুরি জানার জন্য একটা সেলের মধ্যে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ না করে, অ্যামাজনের মত বার ইন্টার্ভিউ টাইপ কিছু করা যায় কিনা সেটা দেখা উচিত। এটা নিয়ে আরেকদিন লিখবো।
আরও একটা কাজ আমি করি সব এইচ আর ডিপার্টমেন্ট কে করতে বলতাম সেটা হলে ক্যান্ডিডেডদের সবার ফেবু, টুইটার আর লিঙ্কডিন প্রোফাইল চাইতে।
মার্কেটিং একটা আর্ট, এটা বিজনেসের সেই আর্ট যা একবার আয়ত্তে আসলে আপনি ভিঞ্চি কিংবা পিকাসোকে ছাড়িয়ে যাবেন। মনে রাখবেন ইউরোপ আর আমেরিকাতে সব চেয়ে বেশী মিলিওনিয়ার হচ্ছে মারকেটাররা যদিও তারা সকলেই পরে ব্যবসা করে টাকা কামিয়েছেন কিন্তু মজার ব্যাপার হল এরা সবাই মারকেটার থাকা অবস্থায় পুরো বিজনেসে নিজেদের ইনভল্ভ রাখতেন। একজন মারকেটারের অনেক বড় একটা গুণ হচ্ছে গল্প বলতে পারা , তার মানে হচ্ছে নাম্বার আর ইমোশন কে জুড়ে দিয়ে গল্প বলার ক্ষমতা। তাই ভালভাবে শিখুন, সময় নিয়ে শিখুন।