Written by 11:17 am Brand Practitioners, Branding Hub

ইউরোপের ইন্টারনেট বেজড বিজনেস আর স্টার্টাপ

Untitled design 2
Walton

ইউরোপের ইন্টারনেট বেজড বিজনেস আর স্টার্টাপ সিন ফলো করার ট্রাই করি বিভিন্ন সোর্স থেকে। ক্ষুদ্র জ্ঞানে যা বুঝি তা হলোঃ

ই-কমার্স বিজনেসটা দখল করে রেখেছে  এ্যামাজন। আরো অনেক কোম্পানিই মার্কেটে আছে কিন্তু এ্যামাজন আসলে মনস্টার। এ্যামাজন খুবই এ্যাগ্রেসিভ এবং শুধুমাত্র একটা জিনিসই তারা কেয়ার করে, তা হল কাস্টোমার। ই-কমার্সে লয়্যাল ইউজারবেজ বলে কিছু ছিলো না, মানুষ অনলাইনে সবচেয়ে কম দামে যেখানে পাইতো সেখান থেকে জিনিস কিনতো। কিন্তু এ্যামাজন যে প্রাইম সাবসক্রিপশনের কনসেপ্টটা আনছে এইটা তাদের লয়্যাল ইউজারবেজ দিছে এবং সেই ইউজারবেজটা হিউজ। এ্যামাজনের দেখাদেখি অনেকেই এই কনসেপ্ট আনছে কিন্তু কেউই এ্যামাজনের ধারেকাছে যেতে পারেনি। এরসাথে আছে এ্যামাজনের সুপার ফাস্ট ডেলিভারি। আজ অর্ডার দিলে কাল দিয়ে যাচ্ছে, অনেক প্রোডাক্ট আজ সকাল ৯/১০টার মধ্যে অর্ডার দিলে সন্ধ্যায় ৬-৯টার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে(প্রাইম ইভিনিং এক্সপ্রেস)। ডেলিভারি ব্যাপারটা আপাত সাধারণ মনে হলেও খুব গুরুত্বপূর্ণ। ধরেন আপনি আগামী পরশু দেশে যাবেন, আজ হঠাত মনে পড়ছে অমক জিনিসটা কেনা হয়নাই। এ্যামাজনে গিয়ে সার্চ করলে ঐ প্রোডাক্ট কালকের মধ্যে ডেলিভারি দিবে এমন কাউকে না কাউকে পাওয়া যাবেই, কাল ডেলিভারি দিলে ২টাকা বেশি দিতেও গায়ে লাগবে না। দরকারের সময় এইটা খুব হেল্প করে। এইখানেই প্রাইম খুব কাজে আসে আর সাথে প্রাইম ভিডিও ইত্যাদির সুবিধা তো আছেই। লাখ লাখ প্রোডাক্ট, ফাস্ট ডেলিভারি; এইসব মিলায়ে এ্যামাজন এমন একটা কমফোর্টজোন দেয়ার ট্রাই করে যেটাতে একবার অভ্যস্ত হয়ে গেলে বের হওয়া খুব কঠিন। যেমন আমি নিজেই যে জিনিস এ্যামাজনে পাই সেটা অন্য কোথাও থেকে কিনি না। আমার বৌ প্রায়ই বলে যে এ্যামাজনে তুমি যে সময় কাটাও সার্চ করে সেই সময় আমাকে দিলে সংসার আরো সুখের হইতো 😑 ফ্যাশন রিটেইলে এ্যামাজনের সাথে একমাত্র পাল্লা দিচ্ছে ZalandoZalando বার্লিনবেজড অনেক বড় কোম্পানি এবং ভালো কাস্টোমারবেজ আছে। যেহেতু এ্যামাজনের মতো ‘সব কিছু’ পাওয়া যায় না জালান্দোতে তাই এরা ফোকাসড থাকতে পারে তবে এ্যাভেইলেবিলিটি এবং অপশনের দিক থেকে এ্যামাজন অনন্য। ইভেন ইন্ডিয়াতেও দেখলাম ফ্লিপকার্ট খুবই হার্ডটাইমের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে এ্যামাজনের সাথে পাল্লা দিতে গিয়ে।

amazon vs zalando

 

স্টার্টাপে গত কয়েক বছরে সবচেয়ে বেশি ইনভেস্টমেন্ট হইছে যানবাহনে; অটোনোমাস কার, রাইড শেয়ারিং এবং পলিউশনলেস ভেহিকল। টেসলা যখন আমেরিকায় আসলো তখন কথায় কথায় একজনকে বলছিলাম যে টেসলা এইদিকে ব্যবসা করতে পারবে না, জার্মান কারমেকাররা ইউরোপে টেসলাকে জেঁকে বসতে দিবে না। এরা নিজেরা অটোনোমাস এবং ইলেকট্রিক কার বানাবে, এদের মতো করে ব্যাটারির চার্জার বানাবে, পুরা ইউরোপে সেইসব গাড়ি চার্জ করার জন্য অসংখ্য চার্জিং স্টেশন বসাবে এবং এই রিজিওনে বিজনেসটা লিড করবে। দেরিতে হলেও সম্ভবত সেটাই হচ্ছে। ভোক্সওয়াগেন(অডি ভোক্সওয়াগেন গ্রুপের কোম্পানি), বিএমডব্লিউ আর ডাইমলার(অনেকেই নাম জানে না, আমিও জার্মানি আসার আগে জানতাম না। ডাইমলার হলো মার্সিডিজ বেঞ্জের মাদার কোম্পানি); এই তিন জায়ান্ট সেলফ ড্রাইভিং কার বানাবে একসাথে। কারণ ১) খরচ কমানো, ২) টেকনোলজি শেয়ার করা, ৩) আমেরিকার কোম্পানিগুলার সাথে পাল্লা দেয়া। এই তিন কোম্পানিই বহুদিন ধরে R&D করতেছে অটোনোমাস ড্রাইভিং ইত্যাদি নিয়ে এবং খুব তাড়াতাড়িই সেলফ ড্রাইভিং কার বড় পরিসরে ইউরোপে আসবে এবং সেটা টেসলার হাত ধরে না এই ব্যাপারে নিশ্চিত থাকা যায়।

আরেক রেভোলুশন আসছে কার/রাইড শেয়ারিং সার্ভিসে। উপরে বলা কার কোম্পানিগুলার সবারই রাইড শেয়ারিং সার্ভিস আছে। BMWর ইউরোপে আছে DriveNow আর আমেরিকায় ReachNow। এছাড়াও আছে ChargeNow সার্ভিস যেটা হলো ইলেকট্রিক কারগুলার জন্য চার্জিং পয়েন্ট। Daimlerর রাইড শেয়ারিং সার্ভিসের নাম car2go, এছাড়া তারা IBMর সাথে আরেকটা সার্ভিস চালু করছে, নাম Moovel। এই জায়ান্টদের মধ্যে রাইড শেয়ারিং সার্ভিসে সবচেয়ে পরে মাঠে আসছে VolksWagen, তাদের সার্ভিসের নাম MOIA। এই ৩টাই বিশাল কোম্পানি, হিউজ গাড়ির পাইপলাইন আছে এবং ব্র্যান্ড হিসাবে রিলায়েবল ও বহুল পরিচিত তাই এদের সাথে পাল্লা দিয়ে আর কেউ রাইড শেয়ারিং সার্ভিস দেয়ার কথা ভাবতেও পারে না। এখন দেখার বিষয় এই জিনিস তারা কতোটা সহজলভ্য এবং কম খরচে নিয়ে আসতে পারে।Untitled design 2

পলিউশনলেস ভেহিকল হলো অটোমোটিভের লেটেস্ট ট্রেন্ড। ই-স্কুটার, ই-বাইক এইগুলা হলো পলিউশনলেস ভেহিকল। খোদ বার্লিনেই এখন অন্তত ৫টা কোম্পানি আছে যারা পলিউশনলেস ভেহিকল নিয়ে কাজ করে এদের মধ্যেWind Mobility ২২ মিলিয়ন, VOI ৫০ মিলিয়ন, Tier ২৫ মিলিয়ন সিরিজ এ ফান্ডিং তুলছে ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্টদের কাছ থেকে। এস্তোনিয়ান ট্যাক্সি সার্ভিস কোম্পানি Taxify কিছুদিন আগে ঘোষণা দিছে যে তারাও ই-স্কুটার আনবে। খালি ইউরোপের কোম্পানিই না, আমেরিকার অনেকগুলা কোম্পানিও ইউরোপে পলিউশনলেস ভেহিকল সার্ভিস দেয়। যেমন Jump, যাদের গতবছর Uber কিনে নিছে ২০০ মিলিয়নে; Bird, এরা ৩০০ মিলিয়নের সিরিজ সি ফান্ডিং তুলছে গত জুনে; Lime, এইবছরের ফেব্রুয়ারিতে তুলছে ৩১০ মিলিয়ন সিরিজ ডি ফান্ডিং। এতোগুলা মার্কেটে থাকার পরও আসতেছে Flash নামের নতুন একটা সার্ভিস যেটা এই ফেব্রুয়ারিতে সিরিজ এ ফান্ডিং তুলছে ৫৫ মিলিয়ন। এটার নাম আলাদা করে বলার কারণ হলো এটা লুকাস গাদোস্কির স্টার্টাপ। এই লোক একজন সফল উদ্যোক্তা(Delivery Hero’র কো-ফাউন্ডার) এবং ইউরোপের টেকসিনে বেশ পরিচিত।

এই সেক্টরগুলা আবার মেশিন লার্নিং, ডিপ লার্নিং ইত্যাদি এ্যাপ্লাই করার মোক্ষম জায়গা। সব মিলায়ে এই মুহূর্তে রাইড শেয়ারিং, পলিউশনলেস ভেহিকল হলো ইউরোপে ফান্ডিংয়ের হটকেট; কিছুদিন আগে যেটা ছিলো ব্লকচেইন এবং ফিনটেক। দেখার বিষয় এই স্রোতে কোন কোম্পানিগুলা টিকে থাকে আর কোনগুলা ধরা খায়।

লিখেছেনঃ রাফিউল সাব্বির

মূল পোস্ট লিংকঃ Brand Practitioners Bangladesh

Share this on
Close